দেশের প্রথম ছয় লেনের কালনা সেতু ১০ অক্টোবর কালনা সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

http://www.71news24.com/2019/03/18/1128

 

শেখ গফ্ফার রহমান, স্টাফ রিপোর্টারঃ

আগামী ১০ অক্টোবর উদ্বোধন করা হবে বহু প্রতীক্ষিত নড়াইলের লোহাগড়ায় নির্মিত দেশের প্রথম ছয় লেনের কালনা সেতু। এ সেতু চালুর অপেক্ষায় প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন সমগ্র দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জন-মানুষ।

 

বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি সেতুটির উদ্বোধন করবেন বলে সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) শ্যামল ভট্টাচার্য।

 

কালনা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও সওজ নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুজ্জামান বলেন, সেতুতে ল্যাম্পপোস্ট দুই-তিন দিনের মধ্যেই বসানো শেষ হবে। টোল প্লাজার সব কাজ উদ্বোধনের আগেই শেষ হবে। গাড়ী চলার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত সেতুটি।

 

সওজের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাইকার অর্থায়নে এ সেতু নির্মিত হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্টান জাপানের টেককেন করপোরেশন ও ওয়াইবিসি এবং বাংলাদেশের আব্দুল মোনেম লিমিটেড যৌথভাবে এ সেতুটি নির্মাণ কাজ করে।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের জানুয়ারী মাসে সেতুর কাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন।

 

গত ২২ সেপ্টেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ওই সেতু পরিদর্শন করেন। সেদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেছিলেন, অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি উদ্বোধন করবেন।

 

প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, সেতুর মাঝখানে বসানো হয়েছে ১৫০ মিটার স্টিলের দীর্ঘ স্প্যান। নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) এ স্প্যানটি তৈরি হয়েছে ভিয়েতনামে। ওই স্প্যানের উভয় পার্শের অন্য স্প্যানগুলো পিসি গার্ডারের (কংক্রিট)। ছয় লেনের এ সেতু হবে এশিয়ান হাইওয়ের অংশ।

 

চারটি মূল লেনে দ্রুতগতির ও দুটি লেনে কম গতির যানবাহন চলাচল করবে। সেতুর দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার ও প্রস্থ ২৭ দশমিক ১০ মিটার। উভয় পাশে সংযোগ সড়ক ৪ দশমিক ২৭৩ কিলোমিটার, যার প্রস্থ ৩০ দশমিক ৫০ মিটার। সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় হয় ৯৫৯ দশমিক ৮৫ কোটি টাকা।

 

২০১৮ সালের ২৪ জুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সেতু কর্তৃপক্ষের কার্যাদেশ চুক্তি হয়। একই সালের ৫ সেপ্টেম্বর কার্যাদেশ দেয়া হয়। তখন থেকে ৩৬ মাস ছিলো মেয়াদকাল। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

 

সওজ ও পরিবহনসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ সেতু চালু হলে নড়াইল, যশোর, বেনাপোল স্থলবন্দর ও বসুন্দিয়া মোড় হয়ে খুলনা থেকে ঢাকায় যাতায়াতকারী পরিবহন মাগুরা-ফরিদপুর হয়ে যাতায়াতের পরিবর্তে কালনা হয়ে যাতায়াত করতে পারবে। এতে বেনাপোল ও যশোর থেকে ঢাকার দূরত্ব ১১৩ কিলোমিটার, খুলনা-ঢাকার দূরত্ব ১২১ কিলোমিটার এবং নড়াইল-ঢাকার দূরত্ব ১৮১ কিলোমিটার কমবে।

 

গত ২৫ জুন পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যশোর ও নড়াইলসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কাছে কালনা সেতু নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে। পদ্মা সেতু পার হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের প্রবেশদ্বার হবে কালনা। এ অঞ্চলের মানুষ ওই সেতু উদ্বোধনের প্রহর গুনছেন। দৃষ্টিনন্দন এ সেতু হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম ছয় লেনের সেতু। এ সেতুর পূর্ব পারে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা এবং পশ্চিম পারে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা।

Please follow and like us: