পদ্মা সেতু রেল সংযোগ নির্মাণ —
পাল্টে যাবে যশোরের বসুন্দিয়ার চিত্র
সাঈদ ইবনে হানিফ ঃ সপ্নের পদ্মা( রেল সংযোগ) প্রকল্প।।
যে প্রকল্পের মাধ্যমে দক্ষিণ বঙ্গের বেশ কিছু জেলা যুক্ত হচ্ছে রেল নেটওয়ার্ক এর সাথে।।প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দেশের অন্যান্য জেলার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার একটি নতুন মাধ্যম সৃষ্টি হবে যশোর জেলার সাথে, বিশেষ করে যশোরের বসুন্দিয়া অঞ্চলের সাথে দেশের অন্যান্য জেলার মানুষের যোগাযোগের মাধ্যম হবে একটি সেতুবন্ধন, ফলে এ অঞ্চলের মানুষের জীবন মানের উন্নয়নে আমূল পরিবর্তন ঘটবে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় বিজ্ঞ মহল। ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
যশোরের রূপদিয়া, বসুন্দিয়া, রাধানগর,ভিটাবল্লা,বাসুয়াড়ী অঞ্চল পরিবেষ্টিত প্রকল্পের কাজ বেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে ওয়েস্ট জোন ( BRWZ) র তথ্য মতে, প্রথম ধাপে ঢাকার কমলাপুর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা যশোর পর্যন্ত নির্মান হচ্ছে ১৭২কিলোমিটার ব্রডগেজ লাইন।। পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে রেললাইন নির্মান সহ এই প্রকল্পে মোট ব্যায় হচ্ছে ৩৯হাজার২৪৬ কোটি টাকা।। রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরে ব্যায়ের দিক দিয়ে দেশের ২য় বৃহৎ ব্যায়ের প্রকল্প এটি।। এখানে বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করছে ১৮হাজার২১০ কোটি টাকা৷। বাকি টাকা অর্থায়ন করবে চীন।। রেলপথটি ঢাকার কমলাপুর থেকে শুরু হয়ে নারায়নগঞ্জে, মুন্সিগঞ্জ, মাদারিপুর, শরিয়তপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নড়াইল হয়ে শেষ হবে যশোরে।। এই রেলপথের প্রথম সেকশন কমলাপুর থেকে গেন্ডারিয়া পর্যন্ত হবে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন।। ২য় সেকশন হবে গেন্ডারিয়া হতে মাওয়া ৩৬কিলোমিটার ব্রডগেজ সিঙ্গেল লাইন।। এই সেকশনে থাকবে চারটি স্টেশন।। ৩য় সেকশন হবে মাওয়া থেকে ভাঙ্গা জংশন পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার ব্রডগেজ সিঙ্গেল লাইন।। এই অংশে স্টেশন হবে পাঁচটি।। ৪র্থ সেকশন ভাঙ্গা জংশন থেকে রুপদিয়া পর্যন্ত ৪৬কিলোমিটার ব্রডগেজ সিঙ্গেল লাইন।। এই অংশে স্টেশন হবে ১০টি।। সবমিলিয়ে কমলাপুর থেকে রুপদিয়া পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথে মোট স্টেশন হবে ২০টি।। যার মধ্যে ১৪টি হবে একবারে নতুন।। এগুলো হচ্ছে রানীগঞ্জ, নিমতলা, শ্রীনগর, মাওয়া,জাজিরা, শিবচর, ভাঙ্গা, নগরকান্দা, মুকসুদপুর, মহেশপুর, লোহাগড়া, নড়াইল, পদ্মবিলা এবং জামদিয়া।। এই ১৭২ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে ২২কিলোমিটার হবে ভায়াডাক্ট রেলপথ অর্থাৎ উড়াল সড়কের মত।। মাটি থেকে ১১মিটার উচুতে হবে রেলপথ।। এই ভায়াডাক্ট অংশে স্টেশন থাকবে দুইটি।। এছাড়া এই প্রকল্পের আওতায় নির্মান করা হবে ৬৬মিটার বড় ব্রিজ এবং ছোটবড় মিলিয়ে ২২৪ মিটার ব্রিজ কালভার্ট, ৩০টি লেভেল ক্রসিং এবং ৪০টি আন্ডারপাস।। পাশাপাশি ১০০টি ব্রডগেজ যাত্রীবাহী কোচ কেনা হবে এই প্রকল্পের আওতায়।।পদ্মা সেতু চালু হওয়া সাথেই মাওয়া থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত রেলপথটি চালু হবে।। তখন এই ৫১কিলোমিটার অংশে নিয়মিত ট্রেন চলবে।। এই প্রকল্পের জন্য ভাঙ্গায় স্লিপার কারখানা তৈরি করেছে CREC৷। প্রায় ৭৫০০বর্গমিটারের এই কারখানায় অটোমেটিক এসেম্বলি সিস্টেমের মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ৫০০স্লিপার তৈরি করবে CREC।। CREC এর অধীনে বর্তমানে ১৬০০ চাইনিজ এবং ৬০০০ বাংলাদেশি কাজ করছে।