মাখন ও ঘি ,গুণে কে কি ? 

http://www.71news24.com/2019/03/18/1128

ডাঃ সুখেন্দু শেখর গায়েন : 

দুধ থেকে মাখন,আর মাখন থেকে ঘি,
পুষ্টিমানে ঘি ,না মাখন ,জেনে রাখি।।

পুষ্টিমানে ঘি মাখনে সমান সমান প্রায়,
ল্যাকটোজ নেই ঘি-র ভেতরে তফাৎ সেটায়।
ঘি-তে কেজিন নেই, এলার্জির ভয় কম,
এলার্জিতে প্রোটিনের প্রভাব ছোট্ট খবর দিলাম।
ক্যালরিতে একটু বেশি যদি ঘি হয়,
( ঘি-র 876 কিলো ক্যালরি )
মাখনেতে কম ক্যালরি, চর্বি কমও রয় ।।
(মাখনে-717 কিলোক্যালরি)
(চর্বি 99.5g ঘিতে,81.11g মাখনে)

সেচুরেটেড ফ্যাটে বাষট্টি গ্রাম, ঘি-য়ে রয়,
বায়ান্ন মাখনে থাকায় দশ কম বলা যায়।
পঁয়ষট্টি গ্রাম চাহিদা চর্বির রোজ দিন,
সেঃফ্যাট বিশের কম ,আজ জেনে নিন।(মাখনে-51.3g,ঘি-61.9g)
ট্রান্স ফ্যাটটা বড্ড খারাপ ,মাখন -ঘিতে আছে,
(মাখনে-3.3g,ঘি-য়ে 4g)
না থাকিলে ভাল হত সব বয়সীর কাছে।
খারাপ কোলেস্টেরল বাড়ায় ট্রান্সফ্যাটে ভাই,
ট্রান্সফ্যাট দেহের ভাল করে এমন খবর নাই।।

ভিটামিন এ বেশি,ই বেশি, কে’ও চমত্কার,
( ঘিতে vit-A 3069 IU–মাখনে 2499IU)
ঘি-র তুলনায় মাখনেতে ওরা কম আবার।
(ঘিতে ই2.8 mg মাখনে 2.32mg)(vit-k 8.6 ও 7mcg)
ঘি খেলে পুষ্টি যেমন ,রান্নায় তাপ বাড়ায়,
( Gheeএর smoke point–485 degree F)
মাখন হলে একটু কম তাপের বিবেচনায় ।
(Butter এর smoke point–350 degree F)
কনজুগেটেড লিনোলেইক এসিড( CLA )ঘি ও মাখনে ,
গরু ঘাস খেলে সিএলএ পাবো– বেশি পরিমাণে ।।
ওটা চর্বি ও প্রদাহ কমায়, রোধে ক্যানসার,
প্রেসারও কমায় সিএলএ, গুণও চমৎকার।
সর্ট চেইনের বিউটাইরিক এসিড রয়েছে ঘি-য়ে,
অন্ত্র স্বাস্থ্য ,ইনসুলিন মাত্রা রাখে ঠিক করিয়ে ।
ক্রহন্স (Crohn’ s)রোগীর উপশম দেয় খায় যদি ঘি,
(Crohn’s disease–Inflammatory bowel disease)
আলসারেটিভ কোলাইটিসেও উপশম বৈ কি।।

এ’ বেশি ঘিয়ের ভেতর, ত্বক-চোখ রাখে ভাল , (VitaminA)
(ঘি-য়ে -3069 IU,মাখনে-2499 IU)
কোষ্টকাঠিন্য ,থাইরয়েডের উপশমও হল।
ঘি-র উপকারী চর্বিগুলো মস্তিষ্ক গড়ে দেয়,
খোকাখুকুর মেধার সাথে স্মৃতিও বেড়ে যায়।
একশ গ্রাম ঘি-য়ে কোলেস্টেরল দু’শ ছাপ্পান্ন (এম জি),
মাখন হলে দুইপনের কম বলে গন্য।
ওমেগা তিন ও ছয় রয়েছে মাখন ও ঘি-তে ,
(ওমেগা 3 ও 6 ঘিয়ে–1.447g ও 2.247g, মাখনে–314mg ও 2716mg)
হার্ট ,প্রেসার ভাল রাখতে হবেই হবে খেতে।

লেসিথিন মাখনে আছে,কোলিনের নির্যাস ,
কোলেস্টেরল বিপাকে লাগে(লেসিথিন) জেনে মিটলো আশ্।
এন্টিঅক্সিডেন্ট ঘি মাখনে ফ্রি-রেডিকেল দমায় ,
ধমণীতে কোলেস্টেরল জমতে এন্টিঅক্সিডেন্ট বাধা দেয়।
লোরিক এসিড মাখনেতে ফাঙ্গাস (দাউদও)রোগ সারে,
মাখন ব্যবহারে ওই রোগে আসে উপকারে।
(ভিটামিন )এ,ডি,ই,কে মাখনে ,ঘিতে ডি নেই,
ডি’ খাবারে থাকলে ভাই ক্যালসিয়াম শোষণ হবেই।।

ঘি ,মাখনে ফ্যাট থাকায় দ্রুত শক্তি দেয়,
দেহ ফ্যাটে মাখনের ফ্যাট জমা নাহি হয়।
শিশুর স্নায়ুতন্ত্র ও ব্রেণগঠনে কোলেস্টেরল চাই,
এরাকিডোনিক এসিড মাখনে খেয়ে মেধা বাড়াই।
(Arachidonic acid–poly unsaturated omega 6 fatty acid present in butter)
কোষ পর্দা তৈরিতে ওই এসিড মূখ্য ভূমিকায় ,
ভিটামিন বি,সি,ডি ঘি -য়ে নেই ,সুখেন জানায়।
ডি’ আছে মাখনে, সি’ নেই গরুর দুধে,
ই’ ভিটামিন ঘি -মাখনে, সহায়ক প্রজননে।।
(ঘি-তে ই–2.8mg,মাখনে-2.32mg)
ব্যথায় ঘি মালিশ করলে উপশম দেয়,
এ কথা বোকাও জানে মিছে কথা নয়।।

স্মরণীয় কথা আছে ,সবার জানা ভাল,
কিছু দিন রাখলে ঘি স্বাদ গন্ধে গেল।
পুষ্টি মানও কমে যায় বিজ্ঞানে কয়,
ঘি ভাল রাখতে তাই আগে জানতে হয়।
ঘি-র সাথে এন্টিঅক্সিডেন্ট সংযুক্ত র’লে ,
ঘি-র জীবন বেড়ে যায় সংযুক্তির ফলে।
তুলসি পাতা ,পান পাতা, ধনের গুড়ায়,
হলুদ মিশ্রিনেও ঘি স্বাদ গন্ধে অটুট রয়।
অর্জুন ও পেঁয়াজের নির্যাস ওই গুন রাখে
আমের বিচির শাঁস পাউডারেও গুণটি থাকে।
দুধ,ঘি আর মাখন খেলে স্বাস্থ্য রক্ষা হয়,
দুধ, ঘি, মাখনের জাতি বিশাল মেধায়।।

Please follow and like us: