একাত্তর নিউজ ডেস্ক : যারা ল্যাপটপ কিনতে চান তারা প্রয়োজন ও ভিন্নতা অনুযায়ী কেমন ডিভাইস কিনবেন সেটির ধারণা পাবেন এ প্রতিবেদন থেকে।
বিভিন্ন জন বিভিন্ন ধরনের কাজ করেন ল্যাপটপ ব্যবহার করে। ফলে তার প্রয়োজন অনুযায়ী হতে হবে ল্যাপটপ। কাজের ধরণ, কাজের মানসহ নানান বিষয় প্রাধান্য পাবে এতে।
বাজারে নানা ব্রান্ডের হরেক রকম মডলের ল্যাপটপ পাওয়া যাবে। বাজারেও বিভিন্ন কনফিগারেশনের হরেক মডেলের ল্যাপটপ পাওয়া যায়। এত মডেলের ভিড়ে কোনটি নিজের কাজের জন্য উপযুক্ত হবে সেটি বাছাই করতে হিমিসিম খেতে হয় ক্রেতাদের।
নিজের কাজের ধরন ও প্রয়োজন বুঝে ল্যাপটপ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কী কী বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে চলুন তা জেনে নেয়া যাক।
আকার ও ওজন
ল্যাপটপের কেনার আগে প্রথমেই এটির আকারের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। যারা ল্যাপটপ বাড়ি কিংবা অফিসেই ব্যবহার করেন তাদের জন্য আকার কিছুটা বড় সমস্যা না হলেও, যারা ল্যাপটপ সাথে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যান তাদের জন্য কিছুটা ছোট আকারের, পাতলা গড়ন ও হালকা ওজনের ল্যাপটপ বাছাই করা উচিত।
প্রসেসর
কাজের ধরন বুঝে প্রসেসর নির্বাচন করতে হবে। কেননা ল্যাপটপের গতি নির্ধারণে প্রসেসরের ভূমিকাই সবচাইতে বেশি। আর প্রসেসর নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাজারে আসা সর্বশেষ ৮ম কিংবা ৯ম প্রজন্মের মডেলগুলোকে প্রাধান্য দিতে হবে। হালকা কাজের জন্য কোর আই ৩ কিংবা এমডি, মাঝারি কাজে কোর আই ৫ আর ভারি কাজের জন্য কোর আই ৭ মডেলের প্রসেসর বিবেচনা করা যেতে পারে।
র্যাম
ল্যাপটপের গতি নির্ধারণে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো এর র্যাম। হালকা মানের কাজের জন্য ৪ থেকে ৮ গিগাবাইট র্যাম যথেষ্ট হলেও যারা ল্যাপটপ দিয়ে গেইমিং কিংবা ভারি মানের ব্যক্তিগত বা পেশাগত কাজ করেন তাদের জন্য অধিক র্যামের ল্যাপটপ বাছাই করাটা বাঞ্ছনীয়। বাজারে বর্তমানে ১৬ কিংবা ৩২ গিগাবাইট র্যাম সম্বলিত ল্যাপটপ পাওয়া যায়। এই ল্যাপটগুলো পছন্দের তালিকায় রাখা যেতে পারে।
স্টোরেজ
নিজের প্রয়োজন বুঝে স্টোরেজ বেছে নিতে হবে। হার্ডডিস্ক স্টোরেজের পাশাপাশি এসএসডি থাকাকে প্রাধান্য দিতে হবে। এসএসডি থাকলে ল্যাপটপের গতি স্বাভাবিকের চাইতে বাড়িয়ে নেয়া যাবে।
ডিসপ্লে ওগ্রাফিক্স
সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য ডিসপ্লের ধরন খুব জরুরী বিষয় না হলেও যারা ল্যাপটপে মুভি দেখেন, হাই গ্রাফিক্স গেইম খেলেন কিংবা গ্রাফিক্সের নানা কাজ করেন তাদের জন্য ভালো রেজুলেশনের ডিসপ্লে বাছাই করতে হবে। সাথে ডিসপ্লের ধরন সম্পর্কেও জেনে নিতে হবে।
বাজারে বর্তমানে টাচ সুবিধাসহ কিছু ল্যাপটপ মিলবে। সেগুলো নেয়া যেতে পারে প্রয়োজন বিশেষে।
গেইমার কিংবা অন্য ব্যবহারকারী যারা ডিসপ্লের ভালো পারফরমেন্স চান, তাদের ডেডেকেটেড গ্রাফিক্স সুবিধাসম্বলিত ল্যাপটপ নির্বাচন করতে হবে।
কীবোর্ড ও টাচপ্যাড
ল্যাপটপের টাচপ্যাড ভালো মানের না হলে ব্যবহার করতে বেশ বেগ পেতে হয়। তাই ল্যাপটপ কেনার আগে টাচপ্যাডের মান যাচাই করে নিতে হবে।
এছাড়া যারা ল্যাপটপে বেশি টাইপ করেন তাদের জন্য ভালো মানের কীবোর্ড সম্বলিত ল্যাপটপ নির্বাচন করতে হবে। কীবোর্ডে ব্যাকলিট থাকলে তা অন্ধকারেও কাজ করাকে সহজ করবে।
ব্যাটারি
ল্যাপটপের ব্যাটারির সক্ষমতা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা দিক। যারা দীর্ঘ সময় বাইরে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করেন তাদের জন্য বেশি ব্যাটারি সক্ষমতার ল্যাপটপ উপযুক্ত। বাজারে কিছু ল্যাপটপ আছে যেগুলো সর্বোচ্চ ১০-১২ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যবহার করা যায় একবার ফুল চার্জ করেই।
ইউএসবি পোর্ট ও অন্যান্য
ল্যাপটপে পেনড্রাইভ কিংবা অন্যান্য যন্ত্রাংশ বা গ্যাজেট সংযোগের জন্য ইউএসবি পোর্ট ব্যবহারের দরকার পড়ে। ডেটা ট্রান্সফারে ভালো গতি পেতে তাই ইউএসবি ৩.০ পোর্টেসম্বলিত ল্যাপটপ নেয়া উচিত। এছাড়া হালের ক্রেজ ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট ও বিবেচনা করা যেতে পারে।
এগুলোর পাশাপাশি অন্যান্য কিছু ফিচার যেমন, ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার সুবিধা, ভালো মানের ওয়েবক্যাম কিংবা এইচডিএমআই বা ভিজিএ পোর্ট ও দেখে নিতে হবে ল্যাপটপ কেনার আগে।
বিক্রোত্তর সেবা
দেশের বাজারে ব্র্যান্ড ও মডেল ভেদে ১-৩ বছরের ওয়ারেন্টি সুবিধা পাওয়া যাবে ল্যাপটপে। ব্র্যান্ড কিংবা মডেল ভেদে কিছুটা ভিন্নতাও থাকতে পারে। তাই কেনার আগে বিক্রয়োত্তর সেবার বিস্তারিত নীতিমালা জেনে ও বুঝে নিতে হবে।