একাত্তর নিউজ ডেস্ক : কেন উইলিয়ামসনের রান আউটের সুযোগ মিস করা মুশফিকুর রহিম এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আক্রান্ত। বিশেষজ্ঞরাও সমালোচনা করছেন। তবে তাঁর ওই ভুলটিই কি নিউজিল্যান্ডের কাছে ২ উইকেটে হারের একমাত্র কারণ? ভিন্নমত পোষণ করছেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। অনলাইন ফেসবুক পাঠকের দৃষ্টি থেকে
খুকন শেখ নামের ক্রিকেট ভক্ত বলছেন, মুশফিকুর রহিম এই হারের জন্য একা দায়ী হবে কেন? কেন মাশরাফি এই হারের দায়ভার নেবে না? দলে মাশরাফির ভূমিকা কি শুধুই অধিনায়কত্ব? গতকাল মাশরাফির এমন একটি বলও প্রতিপক্ষ ব্যাটম্যানের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়নি বলে এই ভক্তের অভিযোগ।
হামিম নামের এক ভক্ত মন্তব্য করেছেন,নিউজিল্যান্ড বোলিং আক্রমণ বাঙালিকে কাবু করে ফেলেছে, নিউজিল্যান্ড ব্যাটিং কিন্তু ইজি খেলছে,তবে আমাদের ফিল্ডিং টা ভালো হয়নি,পেস বোলিং ভালো করে নি,যদি রান ২৮০+ করতে পারতো জয় আশা করা যেতো! এইখানে মুশি’র দোষ দেখছি না!!
তোফায়েল নামের এক ভক্ত বলেন, সবাই মুশফিককে দোষ দিচ্ছে,ব্যাটিং লাইনের দিকে কেউ নজর দিচ্ছে না। আরে ভাই সাকিব যাওয়ার পর, মিথুন, মোসাদ্দেক কি করল? তারা তো ব্যাটসম্যান তাই না? তাদের মধ্যে অন্তত একজন টিকে থেকে ম্যাচটা বের করতে পারত,তখন এটা খুব দরকারও ছিল,যদি হত তাহলে স্কোর ৩০০ এর কাছাকাছি যেতো। প্রতিটি খেলায় মূল চারটি প্লেয়ার রান না করলে দল শেষ,গতদিন মাহমুদউল্লাহ,মিথুন,মোসাদ্দেক যেকোনও একজনের কাছ থেকে ৭০-৮০ আশা করছিলাম, ভুলে গেছিলাম বাংলাদেশে এই জায়গায় হাল ধরার মতো ব্যাটসম্যান নেই।
খেলায় হারজিত রয়েছে এজন্য এককভাবেভাবে কাউকে দায়ী করতে রাজি নন কিছু ভক্ত। রবি নামের এক ভক্ত বলছেন, খেলায় হার জিত থাকবেই তাই বলে কাউকে নিয়ে ট্রল করবেন না, নিউজিল্যান্ডের মতো দেশের সাথে আমাদের দেশ খুব ভালো খেলছে, এবার হয়তে হয়নি। এই মুশফিকের জন্যই আমরা অনেক কঠিন ম্যাচ থেকে জিতে এসেছি, ভুলে গেলে তো চলবে না।
নুমান নামের এক ভক্ত লিখেছেন, কাকে নিয়ে ট্রল করেন আর কাকে নিয়ে সমালোচনা করেন মুশফিককে নিয়ে? হিসাব করে করবেন কারণ স্ট্যাম্পিং মিস করে আমাদের চেয়ে বেশি খারাপ লাগছে মুশির। এই ম্যাচে ভাগ্য একদমী আমাদের সাথে ছিলোনা তাই ম্যাচ হেরেছে সেজন্য একা মুশফিককে দোষ দেওয়া ঠিক না। মুশফিকের মিসটা সবাই দেখছে কিন্তু অবিশ্বাস্য যে একটা ক্যাচ ধরলো এইটা কেউ দেখলোনা, লাভিউ মুশি।
আরশি মনি নামের এক ভক্ত লিখেছেন, কখনোই না। মুশফিক অনেক ভালো খেলেছে। আর এটা একটা মিশটেক ছিলো যদিও না হলে আমাদের জেতার সম্ভাবনা ছিলো। কোনো ব্যাপার না। এমন হয়ে থাকে এরজন্য মুশফিক কে দোষ দেওয়া উচিৎ হবে না। আর মুশফিকের জন্যই দুইটা আউট হয়েছে সেটা কিন্তু ভুলবেন না কেউ।
বিকাশ নামের এক ভক্ত বলছেন, ‘মুশফিক একজন গ্রেট খেলোয়াড়। তবে এই কাজটি লিটন দাশ করলে এত সময় ওর সমালোচনা বেশি হতো। যেমনটি ঘটেছিলো শ্রীলংকায় নিদাহাস ট্রফিতে। একটা ভুলের জন্য ওকে লক্ষ গালি শুনতে হয়েছিলো। ক্রিকেটে ভুল হতেই পারে। তার জন্য গালি দেওয়ার কোনো অপশন আমি খুঁজে পাই না। মুশফিক ও এর ব্যাতিক্রম না। মুশফিক বাংলাদেশ দলের গোল্ড বয়
প্রিন্স নামের এক ভক্ত একটু বিশ্লেষণ করেই বলছেন, তামিমকে আরও আক্রমণাত্মক ভাবে খেলতে হবে, সবসময় এভাবে ডিফেন্সিভ খেলা ফলদায়ক হয়না। ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে এভাবে স্লো স্টার্ট করলে হবেনা। টপ অর্ডার অতিরিক্ত ডট বল খেয়ে কম রান করলে মিডল অর্ডারের উপর বাড়তি চাপ পড়ে। মিডল অর্ডারের কাজ হচ্ছে সিংগেল নিয়ে নিয়ে ইনিংস লম্বা করা। কিন্তু আজকে সমস্ত দায়িত্ব নিতে হয়েছে মিডল অর্ডারকে। অন্যদিকে দলে একজন ক্লিন হার্ড হিটারের খুব বেশি প্রয়োজন।
আরেকটা কথা হচ্ছে, সবাই মোটামুটি ভালোই বল করতেছিলো। ম্যাশ কে লাস্টের দিকে বল করতে আসার কি দরকার ছিলো? সে তো আগেই মাইর খাইছে।
লাওহে মাহফুজ নামের একজনের মন্তব্য, একক ভাবে দায়ী করা টা কোন মনেই ঠিক হবেনা। এখানে ব্যাটম্যানদের আরেকটু ভালো করার উচিৎ ছিলো। ইংল্যান্ড এর মাটিতে ৩০০ রান করা কোন দলের পক্ষে বেশি একটা কঠিন কাজ না। তার পরেও মুশফিক যদি নিজে বাজে রান আউটটা না হতো এবং বাজে ভাবে রান আউট টা মিস না করতো তাহলে ম্যাচের ফলটা ভিন্ন হতে পারতো। তাই বলে কারো উপর একক ভাবে রাগ ঝারাটা ঠিক না। অল্প রানে ভালো একটা ম্যাচ উপহার দিয়েই ফেলছিলো প্রায়, ভাগ্য খারাপ তাই হয়নি।
শনিবার কার্ডিফে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জোর লড়াই করার কথা বাংলাদেশের। কিন্তু অতীত বলছে বড় ব্যবধানে হারের চেয়ে তীরে এসে তরী ডোবার কষ্টে বেশি মুষড়ে পড়ে বাংলাদেশ দল। যদিও দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ কিউইদের কাছে হারের পর জানিয়েছেন, ‘বিশ্বকাপের মত আসরে টানা ম্যাচ জেতা কঠিন। এটা ঠিক যে সম্ভাবনা জাগিয়ে হারলে খারাপ লাগে। তবে ছেলেদের বলে দেওয়া হয়েছে কেউ যেন হতাশায় না ভোগে। টুর্নামেন্টের এখনো অনেকটা বাকি আছে, সুযোগও আসবে