শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় চিরবিদায় নিলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ খালেদুর রহমান টিটো-71news24

http://www.71news24.com/2019/03/18/1128

একাত্তর নিউ,যশোর অফিস  : শ্রদ্ধা আর ভালবাসায় চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও যশোর-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খালেদুর রহমান টিটো। সোমবার (১১ জানুয়ারি) বাদ জোহর যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে মরহুমের নামাজে জানাযা শেষে শহরের কারবালা কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এর আগে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধায় শেষ বিদায় জানান তাদের প্রিয় নেতাকে। জানাজা ও শ্রদ্ধা নিবেদনে সর্বস্তরের মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত।

যশোর ঈদগাহ ময়দানে আজ বাদ জোহর খালেদুর রহমান টিটোর নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয় -ছবি একাত্তর নিউজ ২৪

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী খালেদুর রহমান টিটোর কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন ও জানাজা অংশ নেন যশোর-১ (শার্শা) আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার, ঝিনাইদহ-৩ (কোটচাঁদপুর-মহেশপুর) আসনে সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শফিকুল আজম খান চঞ্চল, বাংলাদেশ ওয়াকার্সপার্টি (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের কেন্দ্রীয় কার্যকরী সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আলম ও সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা অশোক রায়, খুলনা বিভাগীয় বিএনপি সহসাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূর জাহান ইসলাম নীরা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ, সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলাম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি যশোর জেলা শাখার সভাপতি অ্যাড. আবু বকর সিদ্দিকী।এছাড়াও যশোর জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা বিএনপি, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, যশোর পৌরসভা, প্রেসক্লাব যশোর, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট যশোর, উচীচী যশোরসহ বিভিন্ন রাজনীতি অঙ্গনের নেতৃবৃন্দসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের নেতৃবৃন্দ শ্রদ্ধা জানান।

 

খালেদুর রহমান টিটো (১০ জানুয়ারি) রোববার দুপুরে যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি বেশকিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। তার মুত্যুতে যশোরের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

রাজনৈতিক জীবন:

(১লা মার্চ ১৯৪৫ জন্ম-মৃত্যু ১০জানুয়ারী ২০২১)

১৯৬৩ সালে যশোর এমএম কলেজ ছাত্র ইউনিয়নে রাজনীতি হাতে খড়ি হয় তার। ‘৬৭ বাম ধারার শ্রমিক রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।

 

১৯৯০ সালের মে মাসে এরশাদ সরকারের শ্রম ও জনশক্তি প্রতিমন্ত্রী হওয়া এই নেতা রাজনৈতিক জীবনের তিনি অনেক দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। ইপিসিপি (এমএল), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী-ন্যাপ), গণতান্ত্রিক পার্টি, জাতীয় পার্টি, বিএনপি এবং আওয়ামী লীগও করেছেন তিনি। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে যশোর সদর আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।

 

এর আগে বিএনপিতে যোগ দিলেও সদর আসনে দল প্রার্থী না করায় সেই দল থেকে নির্বাচন করেননি বলেন তার ছেলে জিউস।

 

১৯৭৪ সাল থেকে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী-ন্যাপ) করা এ নেতা ১৯৭৮ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ন্যাপের পক্ষ থেকে জিয়াউর রহমানকে সমর্থন দিয়েছিলেন। পরে ১৯৮১ সালে ‘গণতান্ত্রিক পার্টি’ গঠিত হলে এর স্টান্ডিং কমিটির সদস্য হন।

 

১৯৮৪ সালে যশোর পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরে ৮৬ সালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৮৭ সালে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েওছিলেন।

 

১৯৯১ সালের পর জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্বপ্রাপ্ত এ নেতা ৯৬ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর দল ত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দেন।

 

খালেদুর রহমান টিটো ১৯৪৫ সালের ১ মার্চ কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা হবিবুর রহমান আইনজীবী ছিলেন।

 

সাত ভাইবোনের মধ্যে টিটো দ্বিতীয়। টিটোর শিক্ষাজীবন শুরু হয় যশোর জিলা স্কুলে। ১৯৬০ সালে এখান থেকে তিনি ম্যাট্রিক পাশ করেন। ১৯৬৩ সালে ঢাকার কায়েদে আজম কলেজ হতে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। ১৯৬৭ সালে কারাগারে অবস্থানকালে যশোর এমএম কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন করেন।

 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে মাস্টার্সে ভর্তি হলেও রাজনৈতিক কারণে পড়া শেষ করতে পারেননি।

 

১৯৭২ সালের ১৮ মে যশোর শহরের চুটিপট্টির মেয়ে রওশন আরা বেগমের সঙ্গে সংসার জীবন শুরু করেছিলেন টিটো। তাদের তিন ছেলে। ২০০৭ সালে স্ত্রী রওশন মারা যান।

 

এ নেতার তার বড়ভাই মাসুকুর রহমান তোজোকে ১৯৭১ সালে রাজাকার বাহিনী নৃশংসভাবে খুন করেছিল।

 

 

Please follow and like us: