কর্তৃপক্ষের চোখে টিনের চশমা, দেদারছে চুরি হচ্ছ হাসপাতালের মালামাল

http://www.71news24.com/2019/03/18/1128

জি এম অভি :


মাসখানেক ধরে হাসপাতালের মধ্যে ঝালাই ও লোহার খটখট শব্দও শুনতে পারেননি দায়িত্বশীলরা।

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ভবনের মধ্যে অবস্থান করে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্রিল তৈরি করলেও জানতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।  শুধু তাই নয়; তৈরীকৃত গ্রিল দুই দফা পিকআপে তুলে শনিবার সাতক্ষীরায় নেয়া হলেও জানতে পারেননি তত্ত্বাবধায়ক আবুল কালাম আজাদ লিটু। সাংবাদিকদের মাধ্যমে তিনি অবহিত হয়েছেন বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
সরকারি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল। সেখানে দিনরাত সেবা কার্যক্রম চলে থাকে। সেবা প্রদানে নিয়োজিত আছেন অন্তত তিনশ’ কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে পূর্বদিকে পরিত্যক্ত ভবনের মধ্যে কখনো মেইনলাইন ও কখনো হাসপাতালের বিদ্যুৎ খরচ করে গ্রিল নির্মাণ হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে একাধিক সূত্র বলছে, বিষয়টি সবাই জানেন। এখন সাংবাদিকরা খোঁজখবর নিলে সেটা নিয়ে দায়িত্বশীলরা ‘দায়িত্বহীন’ কথা বলছেন।
সূত্র মতে, গত বছর জুন মাস থেকে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড সংস্কার কাজ শুরু হয়। এরপর শুরু হয় হাসপাতালের গেট ও বিভিন্ন রুম নির্মাণ। সর্বশেষ চলতি বছর জুন মাস থেকে শুরু হয় হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের উপরে ৪র্থ তলা নির্মাণ। এসময় প্রতিটা ওয়ার্ডের জানালা পরিবর্তন করে থাই গ্লাস লাগানোর কাজ চলে। ফলে ওয়ার্ডের জানালা ও বারান্দার পুরাতন গ্রিল খুলে হাসপাতালের পুরাতন ভবনে রাখা হয়।
এদিকে, গ্রিল তৈরিতে হাসপাতালের সেই পুরনো মালামাল কিছু কিছু ব্যবহার করা হয়েছে। সরকারি দপ্তরের মালামাল ঠিকাদার ইচ্ছেমতো ব্যবহার করে ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হয়েছেন।
অন্যদিকে, শনিবার দুপুর ১২টা থেকে ১টার মধ্যে সেগুলো একটি পিকআপে করে হাসপাতাল থেকে বাইরে নিয়ে যান ঠিকাদারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী ইদ্রিস আলী। তার কাছে জানতে চাইলে বলেন, যশোর সিভিল সার্জনের অফিসে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু যশোর সিভিল সার্জন অফিসে নেওয়া হয়নি। পিকআপের পিছু নিয়ে এর প্রমাণ মিলেছে। পিকআপটি যশোর সিভিল সার্জন অফিসে যায়নি। অন্য রাস্তা দিয়ে অজ্ঞাত স্থানে গেছে পিকআপটি। পরের দিন রোববার বিস্তারিত খোঁজ নিতে গেলে ইদ্রিস আলী স্বীকার করেন সেগুলো সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের জন্য পাঠানো হয়েছে। বিস্তারিত জানার জন্য তিনি ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। তবে ঠিকাদার আনিসুর রহমান আনিসের মুঠোফোনে ফোন দেয়া হলে তিনি তা রিসিভ করেননি।
একই তথ্য দিয়েছেন যশোরের সিভিল সার্জন ডা. দিলীপ কুমার রায়। তিনি বলেন, যশোর সিভিল সার্জন অফিসে কোনো গ্রিল আসেনি। এখন জানালা বা গ্রিলের দরকার নেই। সিভিল সার্জন অফিসে এখন ভবন নির্মাণকাজ চলছে। ভবন হলে তখন জানালা বা গ্রিল দরকার পড়বে।
এদিকে জানালা ও গ্রিল নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ। সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চাইলে তিনি ঠিকাদারকে ফোন করেন। তখন তার কাছে ঠিকাদার দুঃখ প্রকাশ করেন বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।

Please follow and like us: