ডাকসু নির্বাচনে একজন চিবল সাংমার সংগ্রামী জীবনী

একাত্তর ডেস্ক :  একজন চিবল সাংমা এবং ডাকসু নির্বাচন! 

চিবল সাংমা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.এ শ্রণির শিক্ষার্থী। বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া থানায়। জন্মলগ্ন থেকেই শারীরিক অক্ষমতার বিরুদ্ধে তাকে যুদ্ধ করতে হয়েছে প্রতিনিয়ত। তবু শারীরিক প্রতিকূলতাকে জয় করে চিবল সাংমা মাধ্যমিক (জিপিএ-৫) ও উচ্চমাধ্যমিক (জিপিএ-৪.৫) পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়। তার স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করার। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেবার পর থেকেই তার সহপাঠীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগের জন্য কোচিং করছে। চিবল কোচিং-এ ভর্তি হতে পারে নি; কেননা, কোচিং সেন্টারগুলোতে হুইল চেয়ার নিয়ে উঠানামা করার কোন পরিবেশ নেই, নেই সেধরণের কোন অবকাঠামো, সহযোগিতা করারও কেউ নেই। একটু হতাশ হয়ে গিয়েছিল সে। কিন্তু মনের জোরের ক্ষেত্রে কখনও দমে যায় নি সে। মনের জোর অার অাত্মবিশ্বাস অটুট রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে গেল চিবল সাংমা। ২০১২ সালে মাধ্যমিক, ২০১৪ সালে উচ্চমাধ্যমিক ; এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর থেকে চিবল পড়ালেখার পাশাপাশি যুক্ত হয় ফিজিকাল চ্যালেঞ্জড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সাথে। এই সংগঠনের বর্তমান সহসভাপতি সে। পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে সে সম্পৃক্ত। চিবল জগন্নাথ হলের অাবাসিক ছাত্র। থাকে ৩০২৬ নম্বর কক্ষে। ছাত্রলীগের কোন পদে সে না থাকলেও হল/বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সে নিয়মিত থাকার চেষ্টা করে। ছাত্রলীগের সহযোদ্ধাদের সহযোগিতা সে সবসময় পায়। তার মুখ থেকেই শুনলাম, তার মত শিক্ষার্থীদের পাশে হল বা বিশ্বিবদ্যালয় ছাত্রলীগ সবসময় পাশে থাকে, সাহস জোগায়।
‘তুমি নির্বাচিত হলে তোমার প্রথম করণীয় কাজ কি হবে সে সম্পর্কে একটু বল’- এমন প্রশ্নের সাথে সাথে তার উত্তর ছিল:
“শারীরিক প্রতিবন্ধীদের মানসিক যন্ত্রণা কি অামি জানি, তাদের কষ্ট কি অামি জানি, তাদের অাগে কি প্রয়োজন অামি জানি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতে তাদের জন্য কি কি অন্তরায়, তাও জানি। সেই সমস্যাগুলো দূর করবার জন্য অামি কথা বলবো। পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য অামি কথা বলবো। সর্বোপরি অামি নির্বাচিত হলে ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীর ভোটেই নির্বাচিত হব। ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীর পক্ষে অামি কথা বলতে চাই।”

চিবল সাংমা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের প্রতি কৃতজ্ঞ। কারণ, অাসন্ন ডাকসু নির্বাচনে তারা তাকে সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদের প্যানেলে রেখেছে।

অামরা যারা সাবেক, অামরা এমন মানবিক সিদ্ধান্তে অভিভূত, গর্বিত। এমন সিদ্ধান্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর গর্ব করা উচিত।

জয় হোক চিবল সাংমার। জয় হোক সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদের, জয় হোক বাংলাদেশ ছাত্রলীগের।

তথ্য: জয়দেব নন্দীর ফেসবুক ওয়াল থেকে।

Please follow and like us: