পিকনিকের টাকা না দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখলেন প্রধান শিক্ষক71news24

http://www.71news24.com/2019/03/18/1128

  মোঃ মেহেদী হাসান, মণিরামপুর : পিকনিকের টাকা না আনায় প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থীকে দুইঘন্টা শ্রেণি কক্ষের বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের বিরুদ্ধে।

যশোরজেলার মণিরামপুরে উপজেলার পলাশী বহুমূখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ।

বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) সকালে ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা যশোর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল খালেককে জানান। তখনই তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মণিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকারকে নির্দেশ দেন। জেলার নির্দেশ পেয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার শিক্ষার্থীদের ডেকে কাসে নেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামকে আদেশ দেন। একই সাথে পিকনিক বন্ধ রাখার জন্য তাকে নির্দেশ দেন তিনি। জানা যায়, আগামী রোববার (৮ মার্চ) টুঙ্গীপাড়ায় শিক্ষা সফরের সিদ্ধান্ত নেন পলাশী বহুমূখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ ও প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম। সেইলক্ষে শিক্ষার্থী প্রতি ৫০০ টাকা চাঁদা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু চাঁদা আদায়ের ক্ষেত্রে তেমন সাঁড়া মেলেনি শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে। গত বুধবার পর্যন্ত মাত্র ৩৫ জন শিক্ষার্থী চাঁদা দেয়। প্রতিষ্ঠানটিতে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৪৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বুধবার সকালে বিদ্যালয়ের সমাবেশ শেষে চাঁদা না দেওয়া শিক্ষার্থীদের কাসে ঢুকতে নিষেধ করেন প্রধান শিক্ষক। তিনি তাদেরকে বাড়িতে গিয়ে টাকা আনার নির্দেশ দেন। প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে শিক্ষার্থীরা বাড়িতে টাকা আনতে যায়। পরে কয়েকজন টাকা নিয়ে কাসে ঢোকে। বাকিরা শ্রেণি কক্ষের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে। শিক্ষার্থীদের প্রথম দুই কাস বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখার অভিযোগ এই প্রধানের বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষকের ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র বলেন, স্যারের কথা শুনে আমরা বাড়িতে চলে যাই। বাড়ি থেকে টাকা দেননি বাবা-মা। তখন স্কুলে এসে দুই কাসের সময় ধরে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকি। এরপর হেড স্যার এসে আমাদের কাসে ডেকে নেন। এরপর আমরা কাস করি। জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, পিকনিক আগামী রোববার। হাতে আর সময় ছিল নেই। মাত্র ৩৫ জন ছাত্রছাত্রী চাঁদা দিয়েছে। টাকা জমা নেওয়ার শেষদিন ছিল বৃহস্পতিবার। বাচ্চারা টাকা না আনায় তাদের কাস শুরুর আগে টাকার জন্য বাড়ি যেতে বলেছিলাম। ৫-৭ জন বাড়ি গিয়েছিল। বাকিরা বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল। ১৫-২০ মিনিট পর সবাইকে কাসে ডেকে নেওয়া হয়েছে। যেহেতু টাকা আদায় হয়নি। কেনা-কাটা ও গাড়ি ভাড়া করা হয়নি এখনও। তাই শেষ পর্যন্ত পিকনিকে যাওয়া অনিশ্চিত বলে জানান এই প্রধান।

 

মণিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে পলাশী বহুমূখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পিকনিক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমি ছুটিতে আছি। ফিরে সরেজমিন বিষয়টি খোঁজ নেব। প্রধান শিক্ষক দায়ী হলে তার বিরুদ্ধে বিধিবদ্ধ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please follow and like us: