ভৈরব পাড়ের সব স্থাপনাই অবৈধ

http://www.71news24.com/2019/03/18/1128

জি এম অভি :


উচ্ছেদ বন্ধ করতে দখলদাররা উচ্চ আদালতে সবমিলে ৬৪টি মামলা করেন

উচ্চ আদালতে নদীকে ‘জীবন্ত সত্তা’ ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আইন অমান্য করে গড়ে ওঠা দেশের বড় বড় সব ভবন ভেঙে ফেলা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত ঢাকা-চট্টগ্রামে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হচ্ছে প্রভাবশালীদের বহুতল ভবন।
সেই ধারাবাহিকতায় যশোরে ভৈরব নদের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে পানি আইনের ‘প্লাবন ভূমি’র নিয়ম প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রবিবার জেলা উন্নয়ন কমিটির সমন্বয় সভায় এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী। কালেক্টরেট সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ।

তিনি জানান, যশোর ভৈরব নদ খননের জন্য উচ্ছেদ অভিযান চালাতে হবে। এজন্য পানি আইন প্রয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। পানি আইনের ২০ ও ২১ ধারা অনুযায়ী অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে এই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। এজন্য সপ্তাহ খানেকের মধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পানি আইনের প্লাবন ভূমির শর্তানুযায়ী ভৈরবের শহর অংশের দুই পাড়ের সব বহুতল ভবন অবৈধ। আইন অনুযায়ী নদীর পানি সাভাবিকভাবে যে পর্যন্ত প্রবাহিত হয় তার আরো ১০ মিটার হচ্ছে প্লাবন ভূমি। নদীবন্দর ও সমুদ্র বন্দর এলাকায় এর সীমা ৫০ মিটার। সেই হিসেবে উচ্চ আদালতের সহযোগিতায় ‘গর্ভ করে’ দাঁড়িয়ে থাকা ভৈরব পাড়ের সব স্থাপনাই অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। পানির স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে এসব স্থাপনা উচ্ছেদে কোন আইনগত বাধা নেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ভৈরব খননের কাজ নানা জটিলতায় আটকে যায়। শহর অংশের উচ্ছেদ নিশ্চিত না হওয়ায় পাওয়া যাচ্ছিল না ঠিকাদারও। তবে কয়েক দফা দরপত্রের পর ঠিকাদার মিলেছে। আর এবার অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে ভাবা হচ্ছে নতুন করে।

যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী বলেন, নানা কারণে ভৈরবের যশোর শহর অংশের খনন কাজের জন্য ঠিকাদার পাওয়া যাচ্ছিলনা। তবে ষষ্ঠবারের চেষ্টায় ঠিকাদার মিলেছে। অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযানও শুরু হবে। এবার আমরা পানি আইন প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নতুন এই নিয়মে সীমানা নির্ধারণে সপ্তাহখানেকের মধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ভৈরব রিভার বেসিন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় যশোর শহর অংশের চার কিলোমিটার খননে ব্যয় হবে প্রায় ১১ কোটি টাকা। ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি করবে।

গত ২৮ মার্চ দড়াটানা এলাকার শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর ফের আটকে যায় উচ্ছেদ অভিযান। উচ্চ আদালতের মামলা আর তদবিরের কারণে এই অভিযান থমকে যায় বলে বলছে একাধিক সূত্র। উচ্ছেদ বন্ধ করতে দখলদাররা উচ্চ আদালতে সবমিলে ৬৪টি মামলা করেন। তবে সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবার নেওয়া হচ্ছে নতুন উদ্যোগ।

Please follow and like us: