একাত্তর ডেস্ক :
মৌলভীবাজারে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দিয়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) ছাত্র ওয়াসিম আফনানকে হত্যা করা হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে সদর উপজেলার শেরপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত ওয়াসিম হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের রুদ্র গ্রামের মো. আবু জাহেদ মাহবুব ও ডা. মীনা পারভিনের ছেলে। তিনি সিকৃবির বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য আজ তিনি নবীগঞ্জের আউশকান্দি থেকে উদার পরিবহনের একটি বাসে (ঢাকা মেট্রো ভ-১৪-১২৮০) ওঠেন।
স্থানীয় লোকজন, প্রত্যক্ষদর্শী ও সিকৃবির শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহ থেকে সিলেটগামী উদার পরিবহনের একটি বাসে ওয়াসিমসহ সিকৃবির ১১ শিক্ষার্থী ওঠেছিলেন। তাঁরা মৌলভীবাজারের শেরপুরে প্রয়োজনীয় কাজের জন্য নেমে পড়েন। তখন ভাড়া নিয়ে বাসের চালক ও হেলপারের সঙ্গে তাঁদের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ভাড়া পরিশোধ করে তাঁরা বাস থেকে নেমে আসছিলেন। ওয়াসিম আফনান ছিলেন সবার পেছনে। তিনি বাস থেকে নামার আগেই তাঁকে ধাক্কা দিয়ে বাস থেকে ফেলে দেন হেলপার। এরপর বাসের চালক বাসের স্পিড বাড়িয়ে দেন। বাসটি ওয়াসিমের শরীরের ওপর চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।
গুরুতর আহত ওয়াসিম আফনানকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
শেরপুর পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উদার পরিবহনের বাসটিকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে সিলেটের বেগমপুর নামক স্থানে আটক করা হয়। কিন্তু এর চালক ও সহকারী পালিয়ে গেছেন। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বাস টার্মিনালে হামলা
এদিকে ওয়াসিম আফনানকে বাস থেকে হত্যার প্রতিবাদে সন্ধ্যার পর সিলেট কদমতলী বাস টার্মিনালে হামলা চালিয়ে বাস ও কাউন্টার ভাঙচুর করেন একদল যুবক। পরে তাঁরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হুমায়ুন রশিদ চত্বরে গিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। ঘণ্টা খানেক অবরোধ শেষে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে তারা মেন্দিবাগ পয়েন্টে গিয়ে আবারো অবরোধ ও সমাবেশ করেন।
নিহত ওয়াসিম আফনান সিকৃবি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব হবিগঞ্জের সহসভাপতি ও বাংলাদেশ ডিবেট ফেডারেশনের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।