শেখ গফ্ফার রহমান,স্টাফ রিপোর্টারঃ
করোনাভাইরাসের-উদ্বেগ এখনও পুরোপুরি কাটেনি বিশ্বে। তার মধ্যেই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে মাঙ্কি পক্স। গত পনেরো দিনে সাত জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর মাঙ্কি পক্স নিয়ে সতর্কতা জারি করল ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রক। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া একটি বার্তায় বলা হয়েছে, রোগীর দেহে অপরিচিত যে কোনও ধরনের ক্ষত দেখলেই সতর্ক হতে হবে।
গত ৭ মে প্রথম মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মেলে লন্ডনে। ওই ব্যক্তি সম্প্রতি নাইজেরিয়া থেকে ফিরেছিলেন। তাই বিশেষজ্ঞদের ধারণা ছিল, আফ্রিকাতেই কোনও ভাবে ওই ব্যক্তি এই ভাইরাসের সংস্পর্শে আসেন। কিন্তু তারপর কী ভাবে আরও ছ’জন এই এই রোগে সংক্রমিত হলেন, তা নিয়ে নিশ্চিত নন বিশেষজ্ঞরা। আর সেই কারণেই গোটা ব্রিটেন জুড়ে জারি করা হয়েছে সতর্কতা। প্রসঙ্গত, নতুন আক্রান্ত রোগীদের চার জন সমকামী পুরুষ। তাই সমকামী পুরুষদের আপাতত অতিরিক্ত সতর্ক থাকার পরামর্শও দিয়েছে প্রশাসন।
ভারতে এখনও পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর না মিললেও, সতর্ক কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই এয়ার পোর্ট ও বন্দর এলাকায় নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় এয়ার পোর্ট ও
বন্দর সমূহেকে কড়াকড়ি ও সতর্কতা অবলম্ব করতে বলেছে। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানিয়েছেন এটি এক বিশেষ ধরনের বসন্ত রোগ। এ রোগে প্রাণহানি কম। আতঙ্কের কিছু নয়।
👉এই মাঙ্কি পক্স কী?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঙ্কি পক্স এক বিশেষ ধরনের বসন্ত। জলবসন্ত বা গুটিবসন্ত তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি পরিচিত। তাই প্রতিকারও অপেক্ষাকৃত সহজ। কিন্তু এই মাঙ্কি পক্স ভাইরাসটি এতই বিরল, যে এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্তদের সুস্থ করতে নির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসাপদ্ধতি জানা নেই চিকিৎসকদের। মূলত পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার কিছু দেশে এই ভাইরাসের হদিশ মেলে।
👉আক্রান্তদের উপসর্গ কী?
♦️প্রাথমিক উপসর্গের মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথা যন্ত্রণা, পিঠ ও গায়ে ব্যথার মতো লক্ষণ। দেখা দিতে পারে কাঁপুনি ও ক্লান্তিও।
♦️এর পর দেহের বিভিন্ন লসিকা গ্রন্থি ফুলে ওঠে। সঙ্গে ছোট ছোট ক্ষতচিহ্ন দেখা দিতে থাকে মুখে। ধীরে ধীরে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে সেই ক্ষত।
♦️হাম, বসন্ত, স্কার্ভি ও সিফিলিসের কিছু কিছু লক্ষণের সঙ্গে এই রোগের উপসর্গগুলির কিছুটা মিল পাওয়া যায়। তাই অনেকেই এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলি চিনতে ভুল করেন।
👉কি ভাবে ছড়ায় সংক্রমণ?
একাধিক বন্যপ্রাণীর মাধ্যমে ছড়াতে পারে এই ভাইরাস। তবে এটি সবচেয়ে বেশি ছড়ায় ইঁদুরের মাধ্যমে। পাশাপাশি, আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি থাকলে সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে যেতে পারে বলেও মত বিশেষজ্ঞদের। শ্বাসনালি, ক্ষত স্থান, নাক, মুখ কিংবা চোখের মাধ্যমে এই ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে সুস্থ ব্যক্তির দেহে। আক্রান্তের ব্যবহার করা পোশাক-পরিচ্ছেদ থেকেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।