বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের ৫০তম শাহাদাৎ বার্ষিকী আজ- 71news24

http://www.71news24.com/2019/03/18/1128

 

শেখ গফ্ফার রহমান, একাত্তর নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম ডেক্সঃ

আজ ৮ এপ্রিল ২০২১ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বিনম্র শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি ৮ এপ্রিল ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানী বাহিনীর মর্টারের গুলাতে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফকে।

 

রাঙ্গামাটি-মহালছড়ি যুদ্ধে ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামানের নেতৃত্বে ৮ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এবং ইপিআর-এর ১৫০ জন সৈনিকের দায়িত্বে দেওয়া হয় রাঙ্গামাটি-মহালছড়ি নৌ পথে নিরাপত্তাবুহ্য তৈরির। এই দলের এক নম্বর এলএমজি চালক মুন্সি আব্দুর রউফ ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামের নানিয়ারচর উপজেলাধীন বাকছড়ির একটি বাঙ্কারে।

 

৮ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২ নং কমান্ডো ব্যাটেলিয়ানের দুই কোম্পানী সৈনিক ৭ টি স্পিড বোট ও ২ টি লঞ্চ সহযোগে রাঙ্গামাটি-মহালছড়ি নৌপথের আশেপাশে অবস্থানরত মুক্তিবাহিনীর উপর আক্রমণ করে। লঞ্চগুলোতে ৬ টি ৩” মর্টার সজ্জিত ছিলো। পাকিস্তানী বাহিনী মুক্তিবাহিনীর অবস্থান টের পাওয়া মাত্রই তাদের অবস্থানের উপর ৩” মর্টারের গোলাবর্ষণ শুরু করে। তাদের এই অতর্কিত আক্রমণে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। এই সুযোগে কিছু পাকিস্তানী সৈন্য পাড়ে নেমে মুক্তিবাহিনীর অবস্থান ঘিরে ফেলে।

 

ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান পেছনে হটার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু নিরাপদে অবস্থান ত্যাগের জন্য দরকার নিরবিচ্ছিন্ন কাভারিং ফায়ার। মুন্সি আব্দুর রউফ এর এলএমজির কাভারিং ফায়ারে ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান তার সৈন্যদের নিয়ে পেছনে হটতে থকেন। তার অব্যর্থ গুলিতে স্পিড বোটগুলো ডুবে যায় এবং সেগুলোতে অবস্থানরত পাকিস্তানী সৈন্যরা হতাহত হয়। বাকি সৈন্যরা লঞ্চ দুটিতে করে পালাতে থাকে। পাকিস্তানীরা এলএমজির রেঞ্জের বাইরে গিয়ে ৩” মর্টারের গোলাবর্ষন করতে থাকে। অসীম সাহসী মুন্সি আব্দুর রউফ তখনো গুলি চালানো অব্যাহত রেখেছিলেন। হঠাৎ করে শত্রুর একটি গোলা তার ঠিক উপরে পড়ে। মুহূর্তই ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় বাংলার অসীম সাহসী বীর মুন্সি আব্দুর রউফ এর দেহ। পরবর্তীতে সহযোদ্ধারা তার লাশ উদ্ধার করে নানিয়ারচরের চিংড়ি খাল সংলগ্ন টিলার উপরে সমাহিত করে। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান বিবেচনা করে স্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার তাকে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করেন। বাংলাদেশ রাইফেলস ১৯৭৩ সালে সিপাহী মুন্সি আব্দুর রউফকে অনারারি ল্যান্স নায়েক পদে মরোণোত্তর পদোন্নতি প্রদান করে। বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ তার জীবনের বিনিময়ে রক্ষা করে গেছেন তার প্রায় ১৫০ জন সহযোদ্ধার জীবন এবং পাকিস্তানী বাহিনীর বহু সৈন্যকে আহত-নিহত করেছিলেন।

Please follow and like us: