কে ধরবে যশোর জেলা যুব লীগের হাল?কন্ট্রোল রুম হবে কি পুরাতন কসবা!

http://www.71news24.com/2019/03/18/1128

একাত্তর নিউজ,যশোর অফিস :

করোনার কারনে থমকে গেল যশোর জেলা আওয়ামী যুব লীগের সম্মেলন। আগামীকাল ২৩ জানুয়ারী ঘোষিত জেলা যুব লীগের সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও তা ওমিক্রনের কারণে তা কত দিন দীর্ঘায়িত হলো সেটা জেলার নেতৃবৃ ন্দ এখনো জানতে পারেনি। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মইনুল হোসেন খান নিখিল করোনা আক্রন্ত হয়ে চিকিৎসাধীন আছে। এর আগে ১লা ডিসেম্বর২০২১ জেলা যুব লীগের বর্ধিত সভা থেকে প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সোহেল উদ্দিন সম্মেলনের তারিখ ২৩জানুয়ারী ঘোষণা করেন।

যশোর জেলা যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন কবে হয়েছিলো তা এখনকার নেতারা অনেকেই ভুলে গেছেন। নির্দিষ্ট দিন তারিখ জানতে চাইলে তারা একে অপরকে ফোন করেও সঠিক তথ্য পাননা। তবে এই প্রতিবেদকের অনেক পুরোনো নোট বুক হাতড়ে তথ্য মিলেছে, ২০০৩ সালের ২১ জুলাই যশোরের ঐতিহাসিক টাউন হলে জেলা যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। তাতে জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহম্মেদ চৌধুরী সভাপতি এবং জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির অপর সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক পৌর মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টুকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা হয়। সেই কমিটি অদ্যাবধি বলবত রয়েছে।

তারপর ভৈরব কপোতাক্ষ্ম মুক্তেশ্বরীতে বহু জল গড়িয়েছে। যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে এসেছে বহু রদবদল। জাতীয় রাজনীতিতে অনেক পট পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু যশোর জেলা যুবলীগ যে তিমিরে ছিলো, সেই তিমিরেই রয়ে গেছে। বরং এর মধ্যে ১৮ বছরের কমিটিতে থাকা অনেক ‘যুব নেতা’ চুল-দাড়ি পাকিয়ে বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। কেউ কেউ পারিবারিকভাবে নানা-দাদাও হয়ে গেছেন। তাদের কেউ কেউ নিজেকে এখন ‘যুব নেতা’ পরিচয় দিতে লজ্জা পান।

জহিরুল ইসলাম রেন্টু(সভাপতি প্রার্থী), জাহিদুর রহমান লাবু (সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী), মঈন উদ্দিন মিঠু (সভাপতি প্রার্থী),শফিকুল ইসলাম জুয়েল (সভাপতি প্রার্থী),সৈয়দ মেহেদী হাসান (সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী),হাফিজুর রহমান (সভাপতি প্রার্থী), আনোয়ার হোসেন বিপুল (সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী) ও জাহিদ হোসেন মিলন (সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী)

আর এই ১৮ বছরে যশোর জেলা ছাত্রলীগের তিনটি কমিটি বিদায় নিয়েছে। সে সব কমিটির হাতে গোনা দু’একজন ‘সৌভাগ্যবান’ নেতার ঠাঁই সরাসরি আওয়ামী লীগে হলেও অধিকাংশের ঠাঁই কোথাও মেলেনি। তারা জাতীয় কোনো দিবসে প্যানা-ফেস্টুন দিলে তাতে নিজেকে যুবলীগ নেতা পরিচয় লিখলেও মূলতঃ তাদের কোনো পদ নেই। তারা পরিচয় সংকটে ভুগছেন। কারণ, জেলা যুবলীগের সম্মেলন হয়নি ১৮ বছর। ছাত্রলীগের এক কমিটির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক যথাক্রমে সুখেন মজুমদার ও এস এম মাহমুদ হাসান বিপুর ঠাঁই আওয়ামী লীগের কমিটিতে হলেও সে কমিটির অসংখ্য যুব নেতা আওয়ামী লীগ যুবলীগ কোথাও ঠাঁই পাননি। ছাত্রলীগের এর পরের কমিটির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক আরিফুল ইসলাম রিয়াদ এবং উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুলসহ এ কমিটির কোনো নেতার ঠাঁই মেলেনি কোথাও। তার পরের ছাত্রলীগের কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ছালছালাবিল জিসান ও রওশান ইকবাল শাহী। এই কমিটির দুই ছাত্রনেতা কে হত্যা মামলার অভিযোগে অবশ্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বহিষ্কার করে। সাবেক ছাত্রলীগের নেতারা তারা পরিচয় সংকটে ভুগলেও তাদের বিরুদ্ধে আছে নানা অভিযোগ। তারা ছাত্রলীগ থেকে বিদায় নিলেও সম্মেলনের অভাবে যুবলীগে ঢুকতে পারেননি।

তবে আগামী যশোর জেলা যুব লীগের কমিটিতে কে বা কারা হাল ধরবে তা নিয়ে চলছে নেতা কর্মীদের মধ্যে গুঞ্জন। এরই মধ্যে সভাপতি পদের জন্য ১২জন আর সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে ৩ডজনের সিভি এরই মধ্যে জমা পড়েছে বলে যানা যায়।  তৃর্ণমুল নেতাকর্মীদের একটাই চাওয়া যশোর যুবলীগের হাল ধরুক ক্লিন ইমেজ,আওয়ামী পরিবার,রাজপথ থেকে আশা একজন কর্মীবান্ধব নেতা। তা মধ্যে বেশির ভাগ নেতারাই আছে যশোরের রাজধানী খ্যাত পুরাতন কসবা এলাকার নেতা। যশোরের রাজনৈতিক মহলে আলোচনার গুঞ্জন চলছে জেলা যুবলীগের কন্টোল রুম হতে পারে পুরাতন কসবা।

তবে উল্ল্যেখযোগ্য অনেক সাবেক ছাত্রলীগের নেতাদের নামে আছে বিভিন্ন হত্যা মামলা, চাদাবাজি,মাদক,ভুমিদখল ও অস্ত্রব্যাবসা।

২০০৩ সালের সম্মেলনে নির্বাচিত জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে মোস্তফা ফরিদ আহম্মেদ চৌধুরী ও জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর যশোর ঈদগাহে হওয়া জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। সে সম্মেলনে এমপি শাহীন চাকলাদারকে পুণরায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঈদগা মাঠে কমিটি ঘোষণা করেন। সে কমিটিতে মোস্তফা ফরিদ এবং জহিরুল ইসলাম রেন্টু চাকলাদারকে জেলা আওয়ামী লীগের ২ ও ৩ নম্বর সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়। সেখানে বলা হয় তারা দু’জন যুবলীগ থেকে পদত্যাগ করবেন। কিন্তু তারা দু’জন যেমন যুবলীগ থেকে পদত্যাগ করেননি, তেমনি কেন্দ্রীয় যুবলীগও তাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।

Please follow and like us: