যশোরে মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত দুই শিক্ষক আটক-71News24

http://www.71news24.com/2019/03/18/1128

একাত্তর নিউজ, যশোর অফিসঃ

যশোরের মণিরামপুরের ঝাঁপা দক্ষিণপাড়া মহিলা দাখিল মাদরাসার দশম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মণিরামপুর সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রাকিব হাসান।
ওই সময় পুলিশ তরিকুলকে গণমাধ্যমের সামনে হাজির করে। আর নজরুলকে তার আগে মঙ্গরবার দুপুরে আদালতে হাজির করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

গ্রেফতার দুইজন হলেন, ছাত্রী ধর্ষণকারী তরিকুল ইসলাম ও তার সহযোগী নজরুল ইসলাম। তরিকুল ইসলামকে মঙ্গলবার বিকেলে চাঁচড়া চেকপোস্ট এলাকা থেকে ও নজরুল ইসলামকে সোমবার সন্ধ্যায় খুলনার ডুমুরিয়া বাজার থেকে আটক করা হয়।

তরিকুল মণিরামপুরের বালিয়াডাঙা খানপুর গ্রামের দপ্তরি মোন্তাজ উদ্দিনের এবং নজরুল ঝাঁপা গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে। তারা দুইজন ঝাঁপা দক্ষিনপাড়া দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক।

এএসপি রাকিব হাসান জানান, মাদরাসা ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাতে ওই ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে তরিকুলকে প্রধান ও নজরুলকে সহযোগী উল্লেখ করে মণিরামপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা হওয়ার পর থেকে পুলিশ আসামী গ্রেফতারে অভিযানে নামে। অভিযুক্তরা মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখায় তাদের গ্রেফতারে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে পুলিশকে।

এএসপি বলেন, রাতে সাধারণত শিক্ষার্থীরা বাড়িতে লেখাপড়া করবে। রাতে শিক্ষকরা কেন তাদের কোচিং করাবেন। উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর বিষয়টি দেখভাল করা দরকার।

এদিকে গত শনিবার ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর মেডিকেল ও ২২ ধারায় জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়েছে। তার আগে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে মণিরামপুর হাসপাতালে ভর্তি করে। অপরদিকে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে চাকরি থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছেন।

জানা যায়, ঘটনার ১৫-২০ দিন আগে থেকে ঝাঁপা দক্ষিনপাড়া দাখিল মাদরাসায় দাখিল পরীক্ষার্থীদের সন্ধ্যা কোচিং চালু করেন কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিন দুইজন করে শিক্ষক ১৫-১৭ জন ছাত্রীর কোচিং নেন। গত সোমবার কৃষি শিক্ষক তরিকুল ইসলাম ও সহকারী মৌলভী শিক্ষক নজরুল কোচিং করান। একপর্যায়ে রাত ৮ টার দিকে টয়লেটে যায় ওই ছাত্রী। তারমধ্যে বিদ্যুৎ চলে যায়। তখন টয়লেট থেকে বের হলে তরিকুল তাকে জোরপূর্বক ধষর্ণ করে। আর তাকে সাহায্য করেন নজরুল। পরে তারা অচেতন অবস্থায় রক্তাক্ত ওই ছাত্রীকে মাদরাসার গলিতে ফেলে রেখে যায়।

এদিকে কোচিং শেষে সব শিক্ষার্থী বাড়ি ফিরলেও ফেরেনি ওই ছাত্রী। এরপর রাত ১০টার দিকে স্বজনরা তার খোঁজে মাদরাসায় আসেন। তারা এসে মাদরাসায় কাউকে পাননি।

একপর্যায়ে মাদরাসার টয়লেটের গলিতে গিয়ে ওই ছাত্রীকে রক্তাক্ত অবস্থায় অজ্ঞান পড়ে থাকতে দেখেন তারা। পরে তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নেওয়া হয়। জ্ঞান না ফেরায় রাত দুইটার দিকে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে থেকে ফিরে গত বুধবার (২ অক্টোবর) ওই ছাত্রী পিতামাতাকে সব খুলে বলে। পরে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়। এরপর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী পরের দিন বৃহস্পতিবার মাদরাসায় হামলা চালায়।

Please follow and like us: