আমার মন কাঁদছে! আমি কাঁদছি! নুসরাতের জন্য কাঁদছি! পুরো বাংলাদেশ কাঁদছে ! 

একাত্তর ডেস্ক :  আমার মন কাঁদছে! আমি কাঁদছি! নুসরাতের জন্য কাঁদছি! পুরো বাংলাদেশ কাঁদছে !  এছাড়া আমার যে আর কিছু করার নেই। কান্না, ধর্ষণ, নির্যাতন, নীপিড়ন, অন্তর্দহন, পুড়ে মরাই আমাদের নিয়তি। বিচার চাইবোনা। বিচার চেয়ে লাভ নেই। যে দেশের মানুষ একজন যৌন নীপিড়নকারী এবং খুনির নিঃশর্ত মুক্তির জন্য রাস্তায় নামে সে দেশে বিচার চাইবোনা। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা এবং ধর্মীয় লেবাস যেখানে প্রকট সেখানে বিচার চাইবোনা। বিচারহীনতার খপ্পরে যে সমাজ সেখানে বিচার চাইবোনা।

ধর্ষক অধক্ষ্য সিরাজুদ্দৌলা

আচ্ছা, নুসরাতকে যে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ যৌন নীপিড়ন করলো এবং যারা তাকে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মারলো তাদের আপনি কি বলবেন? নিশ্চয়ই বলবেন এরা পশু।

ধর্ষকের মুক্তির দাবিতে মাদ্রাসাছাত্রীদের মিছিল।

কিন্তু আপনারা কি জানেন, পশু কখনো ধর্ষণ করেনা এবং পশুরা ক্ষুধা নিবারণ ব্যতীত শিকার করেনা। আত্মরক্ষা ছাড়া এক পশু আরেক পশুকে হত্যা করেনা। তাহলে মানুষকে আপনি কোন যুক্তিতে পশু বলেন কিংবা তার নারকীয় কর্মকান্ডকে পাশবিকতা বলেন? মানুষতো পশুর চেয়েও ভয়ঙ্কর।

এখন মানুষ আরো উদ্ভ্রান্ত, আরো নিষ্ঠুর। কেবল ধর্মের গ্যাড়াকলে বন্দী নারীর নিরাপত্তা, নারীর চিন্তা, নারীর বেশভূষা, নারীর সামাজিক অবস্থান, নারীর মূল্যায়ন, নারীর শিক্ষা।

যে

অন্ধকার শক্তি বাংলাদেশকে ধীরলয়ে গ্রাস করছে সে অন্ধকার কতটা বিপদজনক তা এই ধর্ষক মাদ্রাসার অধ্যক্ষের নিঃশর্ত মুক্তির মিছিল দেখলেই অনুমেয়। মাদ্রাসাতে একটা বিরাট প্রজন্মের মগজে কি আছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। মাদ্রাসার এই বৃহৎ প্রজন্ম সেই অন্ধকারের হাতকে দিনকে দিন শক্তিশালী করছে।

নুসরাত প্রতিবাদ করে মারা গেছে। এই প্রতিবাদ আদৌ সমাজ কিংবা রাষ্ট্রে ব্যাপক কোনো ভাবান্তর সৃষ্টি করেছে কি?

কেউকি এই সমাজটাকে এমন অবস্থায় নিয়ে যেতে পারবেন, যে সমাজে আর কোনো রূপা মারা যাবেনা কিংবা আর কোনো নুসরাতকে পুড়ে মরতে হবেনা।

জানি পারবেননা। কারণ, অন্ধকার শক্তি আষ্টেপৃষ্ঠে আমাদের মাকড়শার জালের ন্যায় ঘিরে ফেলেছে। তাছাড়া আমাদের স্মৃতি বড় দূর্বল। একসময় আমাদের অন্তরে সব ফিকে হয়ে যায়। নুসরাতকেও আমরা খুব সহসায় ভুলে যাবো। তারপর ঘটবে হয়তো আরো ভয়ঙ্কর ঘটনা। এমনি করেই চলতে থাকবে এই দেশটা।

সুত্র: মেহরুন নেছার ফেসবুক ওয়াল থেকে।

 

Please follow and like us: